ঢাকা উত্তরায় ইঞ্জিনিয়ার নাফিউর রহমানের নাম এখন এক আতঙ্কের প্রতীক। রাজউকের বাড়ি নির্মাণের ভুয়া পরিকল্পনা দিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, এবং ধীরে ধীরে এলাকাটির একটি ভয়ংকর মাফিয়া চক্রের গডফাদার হয়ে উঠেছেন। তার এই বেআইনি কার্যক্রমে সহায়তা করছে রাজউকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এই চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ এখনো চোখে পড়েনি, ফলে প্রশ্ন উঠছে, নাফিউরকে থামাবে কে?
ভুয়া প্লানের মাধ্যমে প্রতারণা
নাফিউর রহমান প্রথমে একজন প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করলেও, তার অনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উত্তরার অনেক বাড়িওয়ালা তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তিনি রাজউকের অনুমোদিত নকশা এবং কাগজপত্রের ভুয়া সংস্করণ তৈরি করে বাড়ির মালিকদের বাড়ি নির্মাণের জন্য তা বিক্রি করতেন। বাড়িওয়ালারা ভুয়া নকশা দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করায় এখন মারাত্মক বিপদে পড়েছেন, কারণ যেকোনো মুহূর্তে তাদের বাড়ি অবৈধ ঘোষণা করা হতে পারে।
রাজউকের অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজশ
নাফিউর রহমানের এই প্রতারণার সফলতার পেছনে রয়েছে রাজউকের কিছু অসাধু কর্মচারী ও কর্মকর্তার যোগসাজশ। তারা নাফিউরকে সাহায্য করে ভুয়া নকশা এবং অনুমোদনপত্র তৈরি করতে, যা দিয়ে তিনি বাড়ির মালিকদের প্রতারিত করে আসছেন। এদের সহযোগিতা ছাড়া এত বড় মাফিয়া চক্র পরিচালনা করা সম্ভব হতো না। রাজউকের এই অসাধু কর্মচারীরা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে নাফিউরের কার্যক্রমে সহায়তা করে আসছে, যা প্রশাসনিক দুর্নীতির আরও একটি চরম উদাহরণ।
মালিকদের মহা বিপদ: ভুয়া নকশার বাড়ি
বাড়িওয়ালারা নাফিউরের ভুয়া নকশা দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করেছেন, কিন্তু এখন তারা চরম বিপদের মধ্যে আছেন। তাদের বাড়ি আইনত বৈধ না হওয়ায় যে কোনো সময় এসব বাড়ি ভেঙে ফেলা হতে পারে। এই অবস্থায় বাড়ির মালিকরা আর্থিক এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন, এবং তারা জানেন না কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে পারবেন।
তাকে থামাবে কে?
নাফিউর রহমানের বেআইনি কার্যকলাপ থামাতে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রশাসনের অক্ষমতা এবং দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে তিনি ক্রমশই অপরাধ জগতে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছেন। সাধারণ মানুষ এবং বাড়িওয়ালারা এখন তার ভয়ে এবং দুশ্চিন্তায় আছেন।
উত্তরের খোঁজে: প্রশাসনের ভূমিকা
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলছে, নাফিউরকে থামানোর জন্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নেবে? রাজউকের ভেতরের দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে তার মতো প্রতারকদের দমাতে হবে। নাফিউরের বেআইনি কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। একইসঙ্গে, তার সহযোগী রাজউকের অসাধু কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা
নাফিউর রহমানের মতো অপরাধীদের অব্যাহত কার্যক্রম সাধারণ মানুষের জন্য চরম হুমকি সৃষ্টি করছে। তার চক্রের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের দৃঢ় পদক্ষেপ এবং বিচারিক ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাড়িওয়ালাদের নিরাপত্তা ও আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান অসম্ভব।
ঢাকা উত্তরার মানুষ এখন চায় ন্যায়বিচার, এবং নাফিউরের বেআইনি কার্যক্রমের অবসান চাই